হিটলার জার্মানি থেকে ইহুদি খতম করতে চেয়েছিলেন কেন?

 


"ইহুদিবিদ্বেষিতা" যাকে ইংরেজিতে "Antisemitism" বলে, তা কিন্তু নতুন কিছু নয়। ইহুদি জাতি জন্মের পর থেকেই বারবার হয়েছে লাঞ্ছিত, নির্যাতিত ও নিগৃহীত।

ইতিহাসের পুরোটা সময়ই ইহুদিরা ছিল সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত এবং ঘৃণিত এক জাতি। ইসলাম, খ্রিষ্টান ধর্মের সাথে মিল থাকা সত্ত্বেও এসব ধর্মের সাথে বিরোধ চলে এসেছে ইহুদিদের। ঐতিহাসিক এই "ইহুদিবিদ্বেষিতা" প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী জার্মানিতেও ছিল।

এবার আসি হিটলার কেন ইহুদিদের খতম করতে চেয়েছিলেন? কারণটা খুবই স্পষ্ট। তিনি ইহুদিদের ঘৃণা করতেন। এ ঘৃণার সুস্পষ্ট কারণ খুঁজে না পাওয়া গেলেও তার ইহুদিবিদ্বেষীতার সবচেয়ে বড় যে কারণটি ঐতিহাসিকভাবে আলোচিত তা হল প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান ইহুদিদের ভূমিকা।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে জার্মান বাহিনীতে বিদ্রোহ দেখা দেয়। খাদ্য ও রেশনের অভাবে সেনাবাহিনী যুদ্ধ করতে অস্বীকার করে। ঐদিকে ব্রিটিশ, ফ্রেঞ্চ ও মার্কিন বাহিনী জার্মানির উপর চূড়ান্ত আঘাত হানতে প্রস্তুত। এমন অবস্থায় সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক "জার্মান বিপ্লব"। জার্মান বিপ্লবের মাধ্যমে জার্মানিতে কমিউনিজম প্রতিষ্ঠিত না হলেও রাজতন্ত্রের পতন ঘটে এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসান হয়। জার্মানি মাথা নত করে পরাজয় মেনে নেয়।বলাই বাহুল্য, রাজতন্ত্র টিকে থাকলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ আরেকটু দীর্ঘান্বিত হত, সৈন্যদের শান্ত করে আরো কিছুদিন মিত্রবাহিনীর প্রতিরোধ করা যেত। অন্ধ জাতীয়তাবাদী হিটলার চেয়েছিল রক্তের শেষবিন্দু থাকা পর্যন্ত যাতে জার্মানরা তাদের মাতৃভূমি রক্ষা করে। কিন্তু জার্মান বিপ্লব সব নস্যাৎ করে দেয়। জার্মানির পরাজয় ঘটে।

হিটলারের বিশ্বাস ছিল জার্মানি যুদ্ধ চালিয়ে গেলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়লাভ করাও সম্ভব ছিল। তাই, হিটলারের প্রচণ্ড ক্ষোভ জন্মায় জার্মান বিপ্লব এবং এর নেতৃত্ব দানকারী কমিউনিস্টদের উপর। অবাক করার বিষয় হল, ঐ সময় জার্মানিতে অনেক ইহুদিই সমাজতন্ত্রের সমার্থক ছিল।


Comments

Popular posts from this blog

কুষ্টিয়ায় উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক সভাপতি রক্তাক্ত

ইজরাইলি পতাকার অর্থ কি?